সকল প্রকার অমঙ্গল, রোগ, অন্তরায়, উপদ্রব, পাপমার দূরীভূত হয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম সমাজে তথা সমগ্র বিশ্বে সুখ শান্তি মঙ্গলের বিশেষ প্রার্থনার মাধ্যমে রাঙামাটি জুরাছড়ি উপজেলার ধামাইপাড়া বৌদ্ধ বিহারে “কঠিন চীবর দান” অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এ উপলক্ষে শনিবার (২৫ অক্টোবর) কঠিন চীবর দানের পাশাপাশি ধর্মীয় রীতিতে পঞ্চশীল গ্রহন, বুদ্ধ মূর্তি দান, সংঘদান, অষ্টপুরস্কার দান, পিণ্ডুদান,হাজার প্রদীপদান ও আকাশ প্রদীপ প্রজ্জল সম্পন্য করা হয়।
বেলা দুই টায় বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি রিটেন চাকমা কঠিন চীবর (বৌদ্ধ সাধকদের পরার কাপড়) উপস্থিত হাজারো নারী-পুরুষের সাধুবাদ ধ্বনির মধ্য দিয়ে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের দান করেন। পরে তা সব প্রাণীর সুখ ও মঙ্গল কামনায় উৎসর্গ করা হয়।
অনুষ্ঠানে চীবর দানের পাশাপাশি ধর্মীয় রীতিতে পঞ্চশীল গ্রহণ, অষ্টপরিষ্কার দানসহ নানা দানের কাজ সম্পন্ন করা হয়। এরপর ৫০ জন ভিক্ষু একযোগে ধর্মীয় প্রার্থনা করেন। অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম বিশ্ব বিদ্যালয়ের পালি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ড. জিনবোধী মহাস্থবির, জিনপ্রিয় মহাস্থবির, প্রিয় জগৎ স্থবির, কালুদায়ি স্থবির পুণ্যার্থী নারী-পুরুষের উদ্দেশে ধর্মীয় দেশনা (উপদেশ বাণী) দেন।
অনুষ্ঠানে উপজেলাবাসীর পক্ষে বিশেষ প্রার্থনা পাঠ করেন শোভা দেওয়ান। পঞ্চশীল প্রার্থনা ও অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন দীশা চাকমা, নরেশ চাকমা। অনুষ্ঠান শুরুতে সহকারি শিক্ষিকা শিউলী চাকমার নেতৃত্বে স্থানীয় শিশুরা ফুল দিয়ে বরন করেন স্থানীয় ভিক্ষু সংঘদের।
অনুষ্ঠানে জেলা বিএনপির সভাপতি দীপেন তালুকদার দীপু বলেন, মৈত্রী দিয়ে সব কিছুই জয় করা সম্ভব। একতা বদ্ধ আমরা সংঘ চাই, চাই একতাবদ্ধ সমাজ। সুতরাং সকলকে মৈত্রীময় মনোভাব নিয়ে আগামী নতুন বাংলাদেশ গড়াই এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ধামাই পাড়া বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মৃদুল কান্তি চাকমা।
এ সময় মৈদং ইউপি চেয়ারম্যান সাধনা নন্দ চাকমা, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সুরেশ কুমার চাকমা, উপজেলা বিএনপির সভাপতি অনিল বরণ চাকমা, রাঙামাটি জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি নিত্যানন্দ চাকমা, এরাইছড়ি মৌজা হেডম্যান রিতেশ চাকমাসহ হাজারো উপাসক-উপাসিকা সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য বহু বছর আগে বিশাখা প্রবর্তিত নিয়ম অনুসারে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলা থেকে সুতা তৈরি, রং করা, কাপড় বোনা ও চীবর তৈরি করে ভিক্ষুদের নিকট দান করা হয়। পাশাপাশি বাজার থেকে কাপড় কিনে সেলাই করেও চীবর দান করা হয়।
এদিকে ক্ষমা, মৈত্রী ও শান্তির বিশেষ প্রার্থনার মাধ্যমে জুরাছড়ির ডেবাছড়ি পূর্বারাম বৌদ্ধ বিহার অনুষ্ঠিত ১৬তম “কঠিন চীবর দান” অনুষ্ঠিত হয়।
বেলা দুই টায় বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও বনযোগীছড়া ইউপি চেয়ারম্যান সন্তোষ বিকাশ চাকমা কঠিন চীবর (বৌদ্ধ সাধকদের পরার কাপড়) উপস্থিত হাজার হাজার নারী-পুরুষের সাধুবাদ ধ্বনির মধ্য দিয়ে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের দান করেন। পরে তা সব প্রাণীর সুখ ও মঙ্গল কামনায় উৎসর্গ করা হয়।
এ সময় পুণ্যার্থী নারী-পুরুষের উদ্দেশে ধর্মীয় দেশনা প্রদান করেন ধার্ম্মাদাশা ভিক্ষু, ধর্মশ্রী থের, ধর্মলংকার থের প্রমূখ




