রাঙামাটির বিলাইছড়ি উপজেলাকে বলা হয়। ঝর্ণার দেশ। নৌ পথে বিলাইছড়ি সীমানায় প্রবেশ করলে দেখা মিলবে ঝর্ণার দেশে আপনাকে স্বাগতম। এটি শুধু লেখায় সীমাবদ্ধ নয়। বিলাইছড়ির যতই সবুজ বনের দিকে পা বাড়াবেন কানে ভেসে আসবে প্রাকৃতিক ঝর্ণার কল কল পানির শব্দ। যে শব্দ মন প্রাণকে করবে প্রফুল্ল।
উচু নিচু ছোট পাহাড়। পাহাড়ের গোড়ায় ছুয়েছে কাপ্তাই হ্রদের পানি। হ্রদের স্বচ্ছ নীল জলরাশি ও বিস্তৃর্ণ সবুজ পাহাড়ের মাথার ওপর ভেসে বেড়াচ্ছে শরতের মেঘ। বিলাইছড়ির এ দৃশ্য দেখার উপযুক্ত সময় এখন।
বিলাইছড়ির অপূর্ব প্রকৃতি দেখে দু-এক দিনে শেষ করা যায় না। প্রকৃতির কোন বিষয়টি আপনার পছন্দ তার ওপর নির্ভর করছে বিলাই ছড়ি দেখতে আপনার সময় লাগবে কত।
বিলাইছড়িতে আছে বিখ্যাত ধুপপানি ও নকাটা,মুপ্প্যাচড়া, গাছকটাছড়া ও স্বর্গপুর ঝরনা। রয়েছে রাইংখ্যং বগা লেক।
এগুলো দেখতে যাওয়ার পথে দেখা মিলেবে পাহাড়ি গ্রাম ও প্রকৃতির। যাঁরা মেঘে ঢাকা পাহাড়ের নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখতে এবং সীমান্ত সড়ক সাইচল যেতে চান, তাঁদের পরিকল্পনা হবে একেবারে আলাদা। অন্তত দুই দিনের পরিকল্পনা করে সাইচল যাওয়া দরকার।
কোথায় থাকবেন:
বিলাইছড়ি উপজেলা বেশ কয়েকটি আবাসিক হোটেল রয়েছে, এছাড়াও রয়েছে নীলাদ্রি রিসোর্ট ও জেলা পরিষদ রেস্ট হাউজ । সম্পূর্ণ নিরিবিলি পরিবেশে থাকতে পারবেন।
কোথায় খাবেন:
পাহাড়ি হোটেলগুলো ওর্ডার করলে জুম পাহাড়ে জুমের হরেক রকম সুগন্ধিযুক্ত চাল ও সবজির ভরা মৌসুম চলছে। জুমে উৎপাদিত চিনাল, মারফা, শসা, আঠালো মিষ্টিকুমড়া, সুগন্ধি চালকুমড়া, ঝিঙে, চিচিঙ্গা, ঢ্যাঁড়স, জুম আলু, কচু, আঠালো ভুট্টা, টক পাতা, বাঁশ কোড়ল, আদার ফুল, হলুদ ফুলসহ নাম না জানা অনেক প্রকারের সবজির স্বাদ নেওয়ার উপযুক্ত সময় এখন।
কীভাবে আসবেন বিলাইছড়ি:
দেশের যেকোনো জায়গা থেকে বিলাইছড়ি যাওয়া যাবে, তবে সরাসরি নয়। রাঙামাটি জেলা ও কাপ্তাই উপজেলা হয়ে যেতে হবে।
নতুবা রাজস্থলী উপজেলা হয়ে সরাসরি ফারুয়া ইউনিয়নের সীমান্ত সড়ক দিয়ে। সে জন্য প্রথমে ঢাকা বা চট্টগ্রাম যেতে হবে। সেখান থেকে রাঙামাটি নতুবা কাপ্তাই।
ঢাকার কলাবাগান, পান্থপথ ও ফকিরাপুল থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন কোম্পানির বাস যায় রাঙামাটিতে। সময় লাগে ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা।
এ ছাড়া ঢাকা হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে ৩০ মিনিটে যাওয়া যায় চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে। সেখান থেকে ৩ ঘণ্টায় রাঙামাটি নতুবা কাপ্তাই পৌঁছানো যায়। চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে মাইক্রোবাস পাওয়া যায়। রাঙামাটি পর্যন্ত যেতে ভাড়া ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা।
রাঙামাটির বা কাপ্তাইয়ের বোট ঘাট, পরিচিত বা রিসোর্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আগেভাগে যোগাযোগ করলে ব্যবস্থা করে দিবে।