বুধবার, আগস্ট ৬, ২০২৫
মূলপাতাপ্রধান খবরপার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক পরিবেশ ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় : ইউপিডিএফ...

পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক পরিবেশ ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় : ইউপিডিএফ  

আগামী ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে ইউপিডিএফ বলেছে, পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাশাসন ও নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখে কোনভাবে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়।

আজ ৬ আগস্ট ২০২৫ বুধবার এক বিবৃতিতে উপরোক্ত মন্তব্য করেন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) সহসভাপতি নূতন কুমার চাকমা।

সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো উক্ত বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, ‘যেখানে মত প্রকাশ ও সভা-সমাবেশের অধিকার নেই, গণতান্ত্রিকভাবে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনার পরিবেশ নেই এবং যেখানে প্রতিদিন গ্রামে গ্রামে অপারেশনের নামে ভীতিকর পরিস্থিতি জারী রাখা হয়েছে, সেখানে সুষ্ঠু নির্বাচনের আশা করা স্বপ্নবিলাস মাত্র।’

দেশের বিশাল একটি অংশ পার্বত্য চট্টগ্রামে অগণতান্ত্রিক-ফ্যাসিস্ট শাসন বজায় রেখে নির্বাচনের মাধ্যমেও দেশে কোন প্রকৃত গণতান্ত্রিক সরকার ও শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা যাবে না বলে তিনি মন্তব্য করেন এবং বলেন, ‘এই ধরনের তথাকথিত নির্বাচনে কেবল একটি বিশেষ দলের ফ্যাসিস্ট শাসনের পরিবর্তে অন্য একটি দলের ফ্যাসিস্ট শাসনই কায়েম হতে পারে।’

ইউপিডিএফ নেতা পার্বত্য চট্টগ্রামে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে অবিলম্বে চারটি জরুরী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। এগুলো হলো- সেনাশাসন ও নিয়ন্ত্রণ তুলে নিয়ে গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি করা, ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে সৃষ্ট ঠ্যাঙাড়ে বাহিনীকে ভেঙে দিয়ে খুন-গুম-ধর্ষণসহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত এই বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতার ও বিচার করা, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান সন্তু লারমার পরিচালিত সশস্ত্র গ্রুপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং গ্রামে গ্রামে অপারেশন, জনগণকে হয়রানি, গ্রেফতার ও নির্যাতন বন্ধ করা।

নূতন কুমার চাকমা বলেন, ‘ইউপিডিএফের নেতৃত্বে পাহাড়ি জনগণ পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে প্রকৃত গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সমতলের জনগণের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনার জালিম শাসনের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেছিল এবং ৮ আগস্ট ড. ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে স্বাগত জানিয়ে তাদের যৌক্তিক পদক্ষেপের প্রতি সমর্থন ও সহায়তাদানের কথাও ব্যক্ত করেছিল।

‘কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের এক মাস না যেতেই ১৯-২০ সেপ্টেম্বর রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়িতে হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট এবং পুনরায় ১ অক্টোবর খাগড়াছড়ি সদরে সেনা উপস্থিতিতে হামলা ও লুটপাট, অথচ অপরাধীদের বিরুদ্ধে কোন আইনী ব্যবস্থাও না নেয়া, ইউপিডিএফ ও জনগণের ওপর আগের মতোই দমনপীড়ন অব্যাহত থাকা, একটি ভূঁইফোড় ধর্মীয় ফ্যাসিস্ট গোষ্ঠীর চাপে রাষ্ট্র সংস্কার প্রক্রিয়ার মাঝ পথে অত্যন্ত নগ্নভাবে নির্ধারিত বৈঠক থেকে ইউপিডিএফকে বাদ দেওয়া এবং গতকাল ৫ আগস্ট খাগড়াছড়িতে “ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন দিবসে” আয়োজিত ইউপিডিএফের সমাবেশে নগ্ন হামলা ও সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের বাধা দান ইত্যাদি ঘটনায় ড. ইউনূস সরকারের ফ্যাসিস্ট চেহারা জনসমক্ষে উন্মোচিত হয়ে পড়েছে।’

বস্তুত পার্বত্য চট্টগ্রামে ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসন আর ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মধ্যে মৌলিক কোন পার্থক্য নেই বলে তিনি মন্তব্য করেন।

এই অবস্থায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রশ্ন আসে না বলে ইউপিডিএফ নেতা জানিয়ে দেন এবং নব্য ফ্যাসিস্ট ইউনূস সরকারের ওপর থেকে ইউপিডিএফের পূর্ব ঘোষিত সমর্থন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেন।

ইউপিডিএফ নেতা সংবাদ মাধ্যমে দেয়া বিবৃতিতে ‘জুলাই ঘোষণা’ নিয়েও সংশয় প্রকাশ করে বলেন, এতে আরও গুরুত্বপূর্ণ ও মৌলিক বিষয় স্থান না পাওয়ায় অনেক রাজনৈতিক দলের নিকট তা গ্রহণযোগ্য হবে না।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

Most Popular

Google search engine
Google search engine
Google search engine

Recent Comments