পাঠ্যপুস্তক থেকে ‘আদিবাসী’ শব্দ সম্বলিত গ্রাফিতি বাতিলের সিদ্ধান্তে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং পাঠ্যপুস্তকে আদিবাসীদের সঠিক ইতিহাস ও পরিচিতি তুলে ধরার দাবি জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম জন সংহতি সমিতির ছাত্র সংঘগঠন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) এবং হিল উইমেন্স ফেডারেশ (এইচডব্লিউএফ)
সোমবার পিসিপির কেন্দ্রীয় তথ্য প্রচার সম্পাদক অন্বেষ চাকমার স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবী জানায় পার্বত্য চট্টগ্রাম ভিত্তিক দুই সংগঠন।
এতে বলা হয়, গত ১২ জানুয়ারি নবম ও দশম শ্রেণির বাংলা ২য় পত্রের পাঠ্যপুস্তক থেকে ‘আদিবাসী’ শব্দ সম্বলিত গ্রাফিতি বাতিল করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।
‘স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি’ নামক উগ্র সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী সংগঠনের সদস্যদের দাবির প্রেক্ষিতে এনসিটিবি ১২ জানুয়ারি রাতে অনলাইন ভার্সনের পাঠ্যপুস্তক থেকে আদিবাসী শব্দ সম্বলিত গ্রাফিতি বাতিল করে। এনসিটিবি’র এহেন সিদ্ধান্তে পিসিপি ও এইচডব্লিউএফ তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
বিবৃতিতে বলা হয় বাংলাদেশে বসবাসরত ৫০ টির অধিক আদিবাসী জনগোষ্ঠীর আত্মপরিচয়কে নিশ্চিহ্ন করে দিতে উগ্র সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী গোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে অপতৎপরতা চালাচ্ছে। সর্বস্তরের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তীব্র বিরোধিতা সত্ত্বেও ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে আদিবাসীদেরকে ‘উপজাতি, জাতিসত্ত্বা, নৃ-গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়’ নামে অভিহিত করেছিল এবং বিভিন্ন সময়ে ‘আদিবাসী’ শব্দ ব্যবহার না করতে নির্দেশনা জারি করেছিল।
আদিবাসী জনগোষ্ঠী আশা করেছিল যে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের নতুন শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাম্প্রদায়িক এ সিদ্ধান্ত বাতিলপূর্বক আদিবাসীদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে তাদের সঠিক ইতিহাস ও পরিচিতি তুলে ধরাসহ রাষ্ট্রের সর্বক্ষেত্রে আদিবাসীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
কিন্তু বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক ও অর্ন্তভূক্তিমূলক বাংলাদেশ বির্নিমাণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাষ্ট্রের নতুন শাসকগোষ্ঠী তার কার্যক্রম পরিচালনা করার কথা বললেও পাহাড় ও সমতলে বসবাসরত আদিবাসীদের সার্বিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের গৃহীত পদক্ষেপগুলোতে সেটির যথাযথ ও সঠিক প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না।