সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আওতায় রাঙ্গামাটি সড়ক বিভাগের অধীন “বগাছড়ি-নানিয়াচর-লংগদু পর্যন্ত সড়কের (জেড-১৬১২) সম্প্রসারণ বিষয়ে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় যে মতামত প্রদান করেছে সে সম্পর্কে দ্বিমত পোষণ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রামের চার গণতান্ত্রিক সংগঠন বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), হিল উইমেন্স ফেডারেশন, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ।
তারা মন্ত্রণালয়ের মতামতকে সুবিবেচনাপ্রসূত, বাস্তবসম্মত এবং জন ও পরিবেশবান্ধব সম্মত নয় বলে মন্তব্য করেন এবং অবিলম্বে উক্ত মতামত প্রত্যাহারের দাবি জানান।
বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি অমল ত্রিপুরা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি নীতি চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সভাপতি জিকো ত্রিপুরা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের সভাপতি কণিকা দেওয়ান বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মতামতের বিরোধীতা করে সংবাদ মাধ্যমে এক যুক্ত বিবৃতি দেন।
তারা বলেন, গত ১ সেপ্টেম্বর সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের ১৯ জুন ২০২৫ তারিখের পত্রের সূত্রে (স্মারক নং ৩৫.০০.০০০০.০৩৪.১৪.০০১.২৫.১৪১) বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এই মর্মে মতামত প্রদান করে যে, “প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে পাহাড়ি জনপদে পর্যটকদের সমাগত বৃদ্ধি পাবে, পাশাপাশি স্থানীয় জনগণের পর্যটন ভিত্তিক ব্যবসা বাণিজ্যের সুযোগ সৃষ্টি হবে, নতুন কর্মসংস্থানের সাথে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হবে।” [বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের স্মারক নং: ৩০.০০.০০০০.১৫.০৭.০০২.১৯-২০১/১(৪)]
বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উক্ত মতামতের বিরোধীতা করে চার সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলেন, “প্রস্তাবিত সড়ক প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে উক্ত এলাকায় পর্যটন বৃদ্ধির কোন সম্ভাবনা নেই, কারণ উক্ত এলাকায় পর্যটক আকর্ষণের জন্য কোন দর্শনীয় স্থান নেই। উপরন্তু, বগাছড়ি-নানিয়াচর-লংগদু সড়ক নির্মাণ করা হলে উক্ত এলাকায় প্রাকৃতিক বন, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের সমূহ ক্ষতি হবে এবং পাহাড়িরা তাদের ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ হয়ে যাবে।”
তারা আরও বলেন, নৌপথে রাঙ্গামাটি জেলা সদরের সাথে লংগদুর ভালো যোগাযোগ রয়েছে, সুতরাং প্রস্তাবিত সড়কের আদৌ কোন প্রয়োজন নেই। ফলে উক্ত সড়ক জনগণের কোন কাজে আসবে না এবং এক সময় সড়কটি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকবে, যেভাবে বর্তমানে অনেক সড়ক অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
বিগত ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের আমলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সরকারী অর্থ আত্মসাতের সুযোগ করে দেয়ার জন্য উক্ত অপ্রয়োজনীয় সড়ক নির্মাণ প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছিল বলে চার সংগঠনের নেতৃবৃন্দ মন্তব্য করেন।
তারা বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কে তার মতামত প্রত্যাহার করার আহ্বান জানান এবং অবিলম্বে বন ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর বগাছড়ি-নানিয়াচর-লংগদু সড়ক প্রকল্পটি বাতিলের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান।
বার্তা প্রেরক
তনুময় চাকমা
তথ্য প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ
কেন্দ্রীয় কমিটি।
সূত্র: প্রেস বিজ্ঞপ্তি