শনিবার, আগস্ট ১৬, ২০২৫
মূলপাতাক্ষুদ্র জাতি গোষ্ঠীনানিয়াচরে পাহাড়ি ঘরে অগ্নিসংযোগের সত্যতা মিলেনি; ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে পাহাড়ি বাঙালী

নানিয়াচরে পাহাড়ি ঘরে অগ্নিসংযোগের সত্যতা মিলেনি; ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে পাহাড়ি বাঙালী

রাঙামাটির নানিয়াচরে বগাছড়িতে একটি পাহাড়ি ঘর পোড়াকে কেন্দ্র করে ছড়িয়ে পড়া অগ্নিসংযোগের অভিযোগটির কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি।

সোমবার সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে উপজেলার বুড়িঘাট ইউনিয়নের বগাছড়ির কৈলাস পুর্ন পাড়া এলাকার বাসিন্দা মন্টু চাকমার বসত বাড়িটি আকস্মিক আগুনে পুড়ে যায়। এ সময় বাসায় কেউ ছিলেন না। এ ঘটনায় মন্টু চাকমা কাউকে দোষারোপও করছেন না।
সোমবার বিকালে কৈলাস পুর্ন পাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, নানিয়াচর থানার ওসি, সেনাবাহিনী, স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার, প্রতিবেশীরা ছাড়াও এলাকার বাঙালী নেতৃবৃন্দ মন্টু চাকমার পোড়া ভিটায় কথা বলছেন। প্রতিবেশীরা মন্টুর ঘর নির্মাণের কাজ করছেন। গাছের খুটি এনে দিয়েছেন স্থানীয় বাঙালীরাও।
মন্টু চাকমা (৪৫) বলেন, তার বসত ভিটা নিয়ে কারোর সাথে কোন বিরোধ নেই। কেউ আগুন দিয়েছে কিনা সেটাও আমি দেখিনি। তাই আমি কাউকে দোষারোপ করতে চাচ্ছি না।
মন্টু চাকমা বলেন, তার দুই ছেলে এক কন্যা। বড় ছেলে কলেজে পড়ছে। ছেলে মেয়েদের বই পত্র সব পড়ে গেছে। গত সপ্তাহে গরু বিক্রি করে পাওয়া টাকা থেকে ১লাখ ৩০ হাজার টাকা পুড়ে গেছে।

মন্টু চাকমার বাড়ির পাশে প্রতিবেশী দীপেন চাকমা (৪০) বলেন আমরা মনে করছি না কারো দ্বারা মন্টু ঘরে অগ্নসংযোগের ঘটনা হয়েছে। এ জমি নিয়ে কারোর সাথে কোন দ্বন্দ নেই। যে বিরোধের কথা বলা হচ্ছে সেটা এ জমি না। ফেসবুকে যে তথ্য ছড়ানো হচ্ছে সেগুলো ঠিক না।

নানিয়াচর বিএনপির সভাপতি নুরুজ্জামান বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে মন্টু ঘরে বাঙালীরা আগুন দিয়েছে। কিন্তু আমরা এর কোন সত্যতা পাইনি। নুরুজ্জামান বলেন, এ সময়ে আগুনের ঘটনা বেশী হয়। আমরা মনে করছি এ আগুন একটি দুর্ঘটনা অগ্নিসংযোগ নয়। যদি অগ্নিসংযোগের কোন প্রমাণ পাওয়া গেলে ছাড় দেওয়া হবে না।
ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে উপজেলা প্রশাসন, ইউনিয়ন পরিষদ, সেনাবাহিনী, বিএনপি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে নগদ অর্থ, কম্বল এবং খাদ্যশস্য সহায়তা বিতরণ করেছে।
বুড়িঘাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রমোদ খীসা বলেন, অগ্নিসংযোগের গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। এটির সত্যতা পাওয়া যায়নি। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে স্বতস্ফুর্তভাবে পাহাড়ি বাঙালী সবাই সহায়তা করতে এগিয়ে এসেছে।

আগুনের লাগার বিষয়টি পূর্ব শত্রুতা জের ধরে ঘটেছে কিনা কেউ বলতে পারছে না। তবে পুলিশ প্রথমিকভাবে ধারণা করছে রান্নাঘরের চুলার আগুন বা গ্যাস এ আগুন লাগতে পারে।
নানিয়াচর থানার ওসি নাজির আলম বলেন, ঘরে কেউ আগুন দিয়েছে সেটার কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। প্রত্যক্ষদর্শীও কেউ ছিল না। পোড়া ঘরে বিস্ফেোরিত অবস্থায় একটি গ্যাসের সিলিন্ডার পাওয়া গেছে।
নানিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আমিনুল এহসান খান জানান, আগুনের সূত্রপাত কেউই বলতে পারছে না। যেহেতু ঘরটি পাহাড়ের ওপরে ও শুস্কমৌসুম চলছে সেহেতু আবার পুড়ে যাওয়া ঘরে একটি গ্যাস সিলিন্ডারের বিস্ফোরণ বলে মনে করছি।
জমি বিরোধ নিয়ে ইউএনও মোহাম্মদ আমিমুল ইসলাম বলেন, যে জমি বিরোধের কথা বলা হচ্ছে সে জমি বিরোধ মিমাংসা আমি নিজে করে দিয়েছি। সেখানে মন্টু চাকমা কোন পক্ষ ছিল না। সে বিরোধ খুব শান্তিপুর্ণভাবে নিষ্পত্তি হয়েছে। কারোর অসন্তোষ ছিল না।
আবার আশেপাশের লোকজন এ ঘটনায় কাউকে দোষারুপ করছেন না। তাই আগুন লাগার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলা সম্ভব না। বাইরে যে কথাটি ছড়াচ্ছে তা গুজব বলে মনে হচ্ছে। তবে ভেতেরে অন্য কিছু বিষয় থাকে তদন্ত করে দেখা হবে।

RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

Most Popular

Google search engine
Google search engine
Google search engine

Recent Comments