রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার ৪ নং কাপ্তাই ইউনিয়ন এর ৪ নং ওয়ার্ডের জলদাস পাড়া। কাপ্তাই লেকের সু- মনোরম পরিবেশে একটি দ্বীপের মাঝে এই পাড়া অবস্থিত।
একমাত্র নৌ পথ ছাড়া এই পাড়ায় যাবার কোন বিকল্প পথ নেই। পাড়ায় ৭৪ পরিবারের বসবাস। প্রায় ৩ শতের অধিক জনসংখ্যা এই পাড়ায়। অধিকাংশ পরিবারের পেশা কাপ্তাই লেক হতে মৎস্য আহরণ। তাও বছরের ৩ থেকে ৪ মাস মাছ ধরা নিষিদ্ধ মৌসুমে বন্ধ থাকে।
বলতে গেলে দারিদ্র্য সীমার নীচে বসবাস করে থাকেন পাড়াবাসী। তবে পাড়ার লোকজন খুবই ধার্মিক। নিত্য ঠাকুরের পুজা, বিভিন্ন উৎসব পার্বন পালন করে আসছেন বছরের পর বছর ধরে। তবে পাড়ায় ঠাকুরের পুজা এবং প্রার্থনা করতে একমাত্র যে মন্দিরটি আছে সেটার অবস্থা এতই নাজুক যে, বর্ষাকাল হলে টিনের চালের ফাঁক দিয়ে পানি পড়ে।
দুই একবার মন্দিরের স্থায়ী অবকাঠামোর বাজেট আসলেও অগ্যত কারনে তা আলোর মুখ দেখিনি বলে অভিযোগ করেন মন্দির পরিচালনা কমিটির সদস্যরা।
গত সোমবার (৩ মার্চ) দুপুর ১ টায় এই প্রতিবেদক যান সেই জলদাস পাড়ায়। এই সময় শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দিরের সামনে কথা হয় মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি রতন দাশের সাথে।
তিনি বলেন, ১৯৯৫ সালে এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। কিন্তু অদ্যাবধি আমরা কোন সরকারি সুযোগ সুবিধা পাই নাই। মন্দিরটি অবস্থা খুবই নাজুক। অথচ এখানে গীতা স্কুলের ক্লাস হয়, সরস্বতী পুজা এবং মনসা পূজা হয়। আমরা একটি মডেল মন্দির চাই। মন্দির পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রুপন দাশ বলেন, আমাদের এলাকার সবাই মৎস্যজীবি৷ বলতে গেলে সবাই গরীব৷ আমাদের পক্ষে পাঁকা মন্দির করা সম্ভব না। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই এখানে একটা স্থায়ী পাঁকা মন্দির হউক। এলাকার সর্দার মতিলাল দাশ এবং স্থানীয় গীতা স্কুলের শিক্ষক মানিক চন্দ্র দাশ বলেন, সপ্তাহে এই মন্দিরে দুই দিন ছেলেমেয়েদেরকে গীতা শিক্ষা দেওয়া হয়। কিন্তু মন্দিরটা জরাজীর্ণ, বসার কোন জায়গা নেই।
এখানে একটা পাঁকা মন্দির হওয়া জরুরী। স্থানীয় বাসিন্দা লক্ষ্মী রানী দাশ আক্ষেপ করে বলেন, আমরা সন্ধ্যার পর সকলে মিলে যে প্রার্থনা করবো, তার কোন উপাই নাই।
৪ নং কাপ্তাই ইউনিয়ন এর চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আবদুল লতিফ এবং ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবুল হোসেন বলেন, ইতিমধ্যে ঐ এলাকার মগদেশ্বরী মন্দিরের জন্য টি আর খাত হতে লক্ষাধিক টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবে শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দির স্থায়ী পাকাকরণের জন্য জেলা পরিষদ এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সহায়তা ছাড়া সম্ভব না।
কাপ্তাই উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীপক কুমার ভট্টাচার্য এবং সাধারণ সম্পাদক প্রিয়তোষ ধর পিন্টুও ঐ এলাকায় একটি পাঁকা মন্দিরের জন্য সরকারের নিকট জোড় দাবি জানান।