রাঙামাটি জেলা পরিষদ ২০০২ সালে রাঙাপানির সুখীনীল গঞ্জের ফিসারী এলাকায় নির্মাণ করে মিনি চিরিয়াখানা ও বোটানিক্যাল গার্ডেন। এক সময় এ চিরিয়াখানায় ছিল অজগর, গুইসাপ, খরগোশ, বনরুইসহ কয়েক শত প্রাণী ছিল।
এসব বণ্য প্রাণী দীর্ঘ দিন ধরে অযত্নে ও অবেহলায় রাখা হয়েছিল। ছিল না কোন ডাক্তার। দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে সঙ্গীহীন ছিল পুরুষ ভালুকটি। বছরের বণ্য প্রাণীগুলোর খাবার কি সেটাও জানত না চিরিয়াখানায় দায়িত্বে থাকা কর্মচারীরা। ফলে একে একে মৃত্যু হতে এসব প্রাণীগুলোর।
অবশিষ্ট জীবিত ছিল একটি ভালুক,একটি মায়া হরিণ, দুটি সজারু, ৫টি বন মোরগ,৪টি বানর ও ৪টি কচ্ছপ।
এ প্রাণীগুলো সোমবার চট্টগ্রামের বন্য প্রাণী বিভাগের কর্মকর্তা দীপাম্বিতা ভট্টাচার্য্যর নেতৃত্বে এসব বন্য প্রাণী উদ্ধার করা হয়।
বন বিভাগ জানায় উদ্ধার করা এসব বন্য প্রাণী কক্সবাজারের ডলুহাজরা সাফারি পার্কে রাখা হবে।
রাঙামাটি জেলা পরিষদের জনসংযোগ কর্মকর্তা অরুনেন্দু ত্রিপুরা বলেন, চিরিয়াখানা প্রশিক্ষিত জনবল না থাকায় পশুপাখিদের যথাযত যত্ন নেয়া সম্ভব হচ্ছিল না। এ নিয়ে আমরা বন বিভাগের সহায়তায় চেয়েছিলাম। এ প্রেক্ষিতে বন বিভাগ এসে প্রাণীগুলো নিয়ে গেছে।
বন অধিদপ্তরের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. হাতেম সাজ্জাদ মো. জুলকারনাইন বলেন, বন্যপ্রাণীগুলোর মধ্যে ভাল্লুকের শারীরিক অবস্থা ভালো। হরিণের অবস্থা মোটামুটি, চামড়ায় কিছুটা সমস্যা আছে। বানরের চামড়ায় সমস্যা আছে। অন্যান্য প্রাণীগুলো মোটামুটি আছে।
বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা দ্বীপান্বিতা ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘জেলা পরিষদ কর্তৃক প্রধান বন সংরক্ষকের মাধ্যমে এটি অনুমোদন নেয়া হয়েছিল ২০০৮ সালে। তখন উনারা বলেছেন কিছু প্রাণী রাখতে চান, পরে নিঝুম দ্বীপ থেকে কিছু হরিণ আনার বিষয়ে অনুমতি নেয়া হয়েছিল। পর্যায়ক্রমে বন অধিদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে কিছু প্রাণী এনেছিলেন। পরবর্তীতে অন্যান্য যে প্রাণীগুলো এসেছে, সেগুলো কিভাবে এসেছে সেটি বন অধিদপ্তর জানে না। এখানকার প্রাণীর ওপর যথেষ্ট অবহেলা ও পরিচর্যার অভাব রয়েছে, তাই বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটই প্রথমে বন্যপ্রাণীগুলো উদ্ধারের পদক্ষেপ নেয়।